স্বাধীন সকাল ডেস্ক : দেশের পটপরিবর্তনের পরও জুলাই গণহত্যার সহযোগী-উস্কানীদাতা-অর্থের যোগানদাতা স্বৈরাচারের দোসর নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলু কর্তৃক বরিশাল সদর রোডে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সভাপতির পদ দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া প্রভাবশালী এই আ’লীগ নেতার এহেন কর্মকাণ্ডে ক্ষুদ্ধ জনতা। মসজিদের সভাপতির পদ দখলে রাখতে গিয়ে সম্প্রতি অদৃশ্য শক্তিকে ক্ষমতার দাপর্ট প্রদর্শনে গণহত্যাকারী স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে জেল-জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তাদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বরিশাল নগর বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বলছেন, গণহত্যার সহযোগী ও দোসররা এখনও বরিশালের বিভিন্ন কাঠামোতে বীরদর্পে বসে আছেন। স্বৈরাচারের দোসররা শুধু বহাল তবিয়তেই নেই বরঞ্চ উল্টো রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের নানাভাবে কৌশলী পন্থায় দমন-নিপীড়ন-নাজেহালের শিকার করা হচ্ছে।
কর্মীরা বলছেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলু দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদ বনে গিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদী সরকারের দোসর হিসেবে অবৈধ সুবিধা নিয়েছেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বৈরাচারের সাফাই গেয়ে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার পক্ষে সমর্থন জুগিয়েছেন তিনি। তাদের ভাষ্য, গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসররা কিভাবে কোন অদৃশ্য শক্তিতে এখনও বরিশাল কেন্দ্রীয় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সভাপতি পদ আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। আর এ কারণে সহস্রাধিক শহীদের বিনিময়ে এই বিজয় অর্জিত হওয়ার পরও গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসররা বিভিন্ন কাঠামোতে বসে থাকায় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতার মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করে আসছে। প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা বাবলুকে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমে বরিশাল বায়তুল মোকাররম মসজিদের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা বলা হলেও তিনি এসবে কর্ণপাত করেননি। বরংচ এতে তিনি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন। এবং যেসব মুসল্লী কিংবা বিক্ষুব্ধ জনতা পদত্যাগ করার কথা বলেছেন, তাদেরকে টার্গেট করে দমন-নিপীড়নের পথ বয়ে চলেন তিনি। এসব বিষয়ে বেজায় ক্ষুদ্ধ জনতা। সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে সদর রোডের বিক্ষুব্ধ জনতার তোপেরমুখে পড়েন আ’লীগ নেতা সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলু। বিক্ষুদ্ধ জনতার তোপেরমুখে পড়ার ইস্যুকে কেন্দ্র করে তার ওপর হামলা ও অপহরণ চেষ্টা করা হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্নমহল ও গণমাধ্যমে অভিযোগের চাউর ঘটানো হয়। অভিযোগ উঠে- যারা বিগত আ’লীগ সরকারের শাসনামলে বিভিন্ন ধরণের নিপীড়ন, নির্যাতন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন, রাজপথে গণহত্যাকারী স্বৈরাচার সরকার বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরকেই আবার গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসর কর্তৃক হয়রানি, নাজেহালের শিকার করা হচ্ছে। স্বৈরাচারের দোসরদের মাধ্যমে কৌশলী পন্থায় বরিশাল নগরীতে সর্বপ্রথম দমন-নিপীড়ন-নাজেহালের শিকার হন গণহত্যাকারী স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে বরিশালের রাজপথে লড়াকু যোদ্ধা বরিশাল নগর বিএনপির ১৭ নং ওয়ার্ডের আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা সাগর উদ্দিন মন্টি। স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রগ্রামী আরেক যোদ্ধা একই ওয়ার্ডের বিএনপির সদস্য সচিব আরমান শিকদার নুন্নাও দোসরদের টার্গেটের শিকার হন।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিক্ষুদ্ধ জনতার তোপেরমুখে পড়ে আ’লীগ নেতা সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলু নিজেকে রক্ষায় নানা ফন্দি ফিকিরে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ম্যানেজ প্রক্রিয়ার দিকে ধাবিত হন। এরইফলশ্রুতিতে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় বিএনপির আন্দোলনের সংগ্রামের লড়াকু যোদ্ধা সাগর উদ্দিন মন্টির বিরুদ্ধে হামলা ও অপহরণ চেষ্টার মামলা ঠুকে দেন। ঘটনার পরের দিন বায়তুল মোকাররম মসজিদ কমিটির সভাপতি ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলুকে মারধর ও অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ তুলে মুসল্লীদের ব্যানের আ’লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নিয়ে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা আরো একহাত দেখিয়ে ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে পাওয়া বিজয়কে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জুলাই বিপ্লবের পর ঘাপটি মেরে থাকা গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসররা এ বিজয়কে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
অভিযোগ উঠেছে, নগর বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতার সঙ্গে বাবলুর গোপন বুনিবনায় আঁতাতের রাজনীতির খেসারত দিচ্ছেন রাজপথের ত্যাগী কর্মীরা। থানায় মামলা ঢুকে দেওয়া, নগর বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতার সঙ্গে মোটা অঙ্কের গোপন বুনিবনায় ম্যানেজের মাধ্যমে দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী সাগর উদ্দীন মন্টি ও আরমান শিকদার নুন্নাকে অব্যহতি দেওয়া হয়। আ’লীগ নেতার মিশনের ফলাফল- বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর সদর রোড নিজ বাসভবন থেকে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতা সাগর উদ্দিন মন্টিকে গেপ্তার করে। অবশ্য দুপুরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিকেলেই আদালত তাকে জামিন দিয়ে মুক্ত করেছেন।
কর্মীরা বলছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে ফ্যাসিবাদের সেই অচলায়তন ভেঙ্গে সত্যিকারের স্বাধীনতার সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে, সেই মুহুর্তে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কার্যক্রমকে ম্লান করে দেওয়ার নানা ধরণের পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে গণহত্যর সমর্থনকারী স্বৈরাচারের দোসররা।
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে- এখানকার বিএনপি নেতাদের নাজেহাল অবস্থার জন্য দায়ী কে বা কারা? বরিশাল বিএনপির বর্তমান শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতা মোটা অঙ্কের গোপন বুনিবনার মাধ্যমে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে হিসেবে কাজ করছেন বলে দলের নিবেদিত কর্মীরা দাবি করছেন। তাদের ভাষ্য, এটাকে বলা হয়-আঁতাতের রাজনীতি। ৫ আগস্টের পর বিশেষ করে বরিশাল নগরীতে বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতা ‘মামলা বাণিজ্যে’র মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পকেটে গুজে নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক অন্ধরমহলসহ বিভিন্ন মহল থেকে কথা উঠে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের ত্যাগীরা বলছেন, বরিশাল নগর আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে আঁতাতের কারণেই দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পরও দলের ত্যাগী-নিবেদিত নেতাকর্মীরা দমন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। গোপন বুনিবনার লেনদেনের সমাঝোতা কিংবা আঁতাতের রাজনীতি এভাবে চলতে থাকলে দুর্দিনে রাজপথে থাকা মাঠের নেতাকর্মীদের মধ্যে আরো অনেকেই নাজেহাল হবেন বলে মন্তব্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
বিএনপি নেতা সাগর উদ্দিন মন্টি বলেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লীরা সর্বসন্মিতিক্রমে আমাকে দুই বার সম্পাদক পদে বসিয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক থাকাবস্থায় সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সম্পাদক বর্তমানে পলাতক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ কথায় আমাকে মসজিদ থেকে জোর করে বের করে দিয়েছিলন। সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র পদ থেকে সটকে পড়ার পর আবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মুসল্লীরা আমাকে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসর (বর্তমানে পলাতক) খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র পদে আসীন হওয়ার পর মসজিদ বিষয়ক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আলোচনার সময় আ’লীগের গুণ্ডা বাহিনী ভাড়া করে মসজিদে এনে আমাকে অপমান-অপদস্ত করে আবারো বের করে দেয়। দলের দুর্দিনে জেলজুলুম-দমন-নিপীড়নের শিকার সাবেক ছাত্রদল নেতা সাগর উদ্দিন মন্টি বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর আওয়ামী লীগের মহানগর আইন বিষয় সম্পাদক গোলাম মাসউদ বাবলুকে আমি অতীতে তাদের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির কিছু কথা মনে করিয়ে দিলে, তিনি অগ্নিমূর্তি রূপ ধারণ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতার তোপেরমুখে পালিয়ে যান গোলাম মাসউদ বাবলু।। অবাক! এরপর উল্টো থানায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন তিনি। থানায় আমি প্রথমে এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও আমার অভিযোগটি রেকর্ড না করে স্বৈরাচারের দোসর আ’লীগ নেতা বাবলুর অভিযোগ রেকর্ড করা হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে- ১৫ লাখ টাকার বিনিময় আমাকে আওয়ামী লীগের কথায় আহবায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। পাশাপাশি সদস্য সচিব আরমান শিকদার নুন্নাকে অব্যহতি দিয়েছে। আমি হার্ট এ্যাটাকে করলে স্থানীয়রা আমাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় আসার পরে আমাকে যৌথ বাহিনী দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়।
দলীয়, স্থানীয়সহ বিভিন্ন সূত্রের ভাষ্য, বরিশাল সিটি নির্বাচনে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) বিজয়ী হওয়ার সপ্তাহখানেক পর বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক সাগর উদ্দিন মন্টিকে লাঞ্ছিত করে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছিলেন নগর আ’লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলুর অনুসারীরা। ছাত্র-জনতার অভুত্থানের মুখে স্বৈরাচারের পতন হলে কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকার পর বায়তুল মোকাররমের সভাপতির চেয়ার আঁকড়ে রাখতে মসজিদে গেলে বিক্ষুদ্ধ জনতার তোপেরমুখে পড়েন তিনি। এই ঘটনার পরের দিন দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে দলীয় পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। সাগর উদ্দিন মন্টি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন শেবাচিম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পরে সদর রোডের বাসায় আসলে ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে যৌথ বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করেন। জিজ্ঞাসাবাদের পরে একইদিন অসুস্থ মন্টিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল, অ্যাডভোকেট মাসুদ ও অ্যাডভোকেট শাহিনসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সাগর উদ্দিন মন্টির পক্ষে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্মম নির্যাতন এবং বর্তমানে সাজানো অজুহাতে আ’লীগ নেতার মামলার বিষয়টি তুলে ধরেন। দীর্ঘ শুনানী শেষে মেট্রোপলিটন মেজিষ্ট্রেট জামিন মঞ্জুর করেন।
স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদী সরকারের আমলে রাজপথের লড়াকু যোদ্ধা বিএনপি নেতা আরমান শিকদার নুন্না বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে সাড়ে ১৫ বছরে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবিতে স্বৈরাচার পতন ও বাংলাদেশে নতুন প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করার আকাঙ্ক্ষায় নবযুগের সূচনায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসসহ সমগ্র জাতিকে ঋণভারে বিধ্বস্ত করে নিষ্ঠুর পৈশাচিকতায় নির্মম হাতে গণতান্ত্রিক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করেছেন। গণতন্ত্রকামী মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করার পাশাপাশি গুম-খুনের বর্বরতায় মত্ত ছিলেন। ছাত্র-জনতার রক্তভেজা অভ্যুত্থানের গণহত্যাকারী স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জিত হলেও তাদের দোসররা দোর্দণ্ড প্রতাপে বরিশালের বিভিন্ন সেক্টরে এখনও কলকাঠি নাড়ছেন। এবং নগর বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা গোপন বুনিবনায় মোটা অঙ্কের বিনিময়ে আ’লীগের সঙ্গে আতাঁতের রাজনীতির খেসারত দিতে হচ্ছে স্বৈরাচার-ফ্যাসীবাদী বিরোধী আন্দোলনের রাজপথের যোদ্ধাদের।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে আ’লীগ নেতার মামলা রেকর্ড হলেও বিএনপি নেতার মামলা রেকর্ড না হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তদন্তকারী কর্মকর্তা কি করেছেন, এ মুহুর্তে বলতে পারবনা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ গোলাম মাসউদ বাবলু বলেন, মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর আমাকে মারধর ও অপহরণ চেষ্টা করার প্রেক্ষিতে থানায় মামলা দায়ের করেছি। এরইপরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সাগর উদ্দিন মন্টি গ্রেপ্তার হন। এরপর কোর্টে অসুস্থ দেখিয়ে তিনি জামিন নিয়েছেন। মসজিদ কমিটির সভাপতি পদ আঁকড়ে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মসজিদ কমিটির সভাপতির পদ থেকে পতদ্যাগ করতে চাইছিলাম, মুসল্লীরা আমাকে জোর করে সভাপতির পদে রেখেছেন।
ক্ষুদ্ধ জনতা বলছেন, গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের দোসররা বরিশালের বিভিন্ন কাঠামোতো এখনও বীরদর্পে অবস্থান করে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে বিভিন্ন পন্থায় কলকাঠি নাড়ছেন। এজন্য বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এ বিষয়ে আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
অপরদিকে, এসব বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা। একইসঙ্গে দলের ত্যাগী কর্মীরা দলের হাইকমান্ডের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টি কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে সংঘটিত অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেয়।